তাহাজ্জুদ পড়লে অনেক অনেক উপকার! কিন্তু তাহাজ্জুদ না পড়লে কী ক্ষতি?

তাহাজ্জুদ পড়লে অনেক অনেক উপকার! কিন্তু তাহাজ্জুদ না পড়লে কী ক্ষতি?
প্রথম ক্ষতি: (عباد الرحمن) এবাদুর রহমান। রহমানের বান্দারা। তাহাজ্জুদগুজার মুমিনগনকে আল্লাহ ‘এবাদুর রহমান’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাহাজ্জুদ না পড়লে, এই দলভুক্ত হওয়া যাবে না:
َالَّذِينَ يَبِيتُونَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَقِيَامًا
-যারা রাত অতিবাহিত করে নিজ প্রতিপালকের সামনে (কখনও) সিজদারত অবস্থায় এবং (কখনও) দন্ডায়মান অবস্থায় (ফুরকান: ৬৪)।
.
দ্বিতীয় ক্ষতি: (المتقين) মুত্তাকীন উপাধি থেকে বঞ্চিত হওয়া।
إن المتقين في جنات وعيون... كَانُوا قَلِيلًا مِنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ * وَبِالْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ
-মুত্তাকীগণ অবশ্যই উদ্যানরাজি ও প্রস্রবণসমূহের ভেতর থাকবে......! তারা রাতে খুবই কম ঘুমাত এবং তারা সাহরীর সময় ইস্তিগফার করত (যারিয়াত: ১৫-১৮)।
.
তৃতীয় ক্ষতি: (القانت وأولي الألباب) কানিত (অনুগত বিনম্র ইবাদতগুজার) ও জ্ঞানের অধিকারী এই দুই অসাধারণ লকব থেকে বঞ্চিত হওয়া।
(أَمَّنْ هُوَ قَانِتٌ آنَاءَ اللَّيْلِ سَاجِدًا وَقَائِمًا يَحْذَرُ الْآخِرَةَ وَيَرْجُو رَحْمَةَ رَبِّهِ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ. يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الْأَلْبَابِ
-তবে কি (এরূপ ব্যক্তি সেই ব্যক্তির সমতুল্য হতে পারে,) যে রাতের মুহূর্তগুলোর ইবাদত করে, কখনও সিজদাবস্থায়, কখনও দাঁড়িয়ে, যে আখেরাতকে ভয় করে এবং নিজ প্রতিপালকের রহমতের আশা করে? বলুন, যে ব্যক্তি জানে আর যে জানে না উভয়ে কি সমান? (কিন্তু) উপদেশ গ্রহণ তো কেবল বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরাই করে (যুমার: ৯)।
.
চতুর্থ ক্ষতি: বিশেষ সম্মানজনক অবস্থান হারানো।
(لَيْسُوا سَوَاءً ۗ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ أُمَّةٌ قَائِمَةٌ يَتْلُونَ آيَاتِ اللَّهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَهُمْ يَسْجُدُونَ
-(তবে) কিতাবীদের সকলে এক রকম নয়। কিতাবীদের মধ্যেই এমন লোকও আছে যারা সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত, যারা রাতের বেলা আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করে এবং তারা (আল্লাহর উদ্দেশে) সিজদাবনত হয় (আলে ইমরান: ১১৩)।
.
পঞ্চম ক্ষতি: নেক আমল দ্বারা মন্দ আমল দূর করার সুযোগ হাতছাড়া হওয়া। এই সুযোগ লাভের অন্যতম শর্ত হলো, রাতের কিছু অংশে কিয়াম করা:
(وَأَقِمِ الصَّلَاةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ
-এবং (হে নবী!) দিনের উভয় প্রান্তে এবং রাতের কিছু অংশে নামায কায়েম করুন। নিশ্চয়ই পুণ্যরাজি পাপরাশিকে মিটিয়ে দেয়। যারা উপদেশ মানে তাদের জন্যে এটা এক উপদেশ (হুদ: ১১৪)।
.
ষষ্ঠ ক্ষতি: মাকামে মাহমুদ বা প্রশংসিত স্থান না পাওয়া।
وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَكَ عَسَىٰ أَنْ يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُودًا
-রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়বেন, যা আপনার জন্যে এক অতিরিক্ত ইবাদত। আশা করা যায় আপনার প্রতিপালক আপনাকে ‘মাকামে মাহমুদে’ পৌঁছাবেন (বনী ইসরাঈল: ৭৯)।
.
সপ্তম ক্ষতি: আল্লাহ তা‘আলার ওয়াদাকৃত বিশেষ রেযা বা সন্তুষ্টি অর্জন করতে না পারা।
وَمِنْ آنَاءِ اللَّيْلِ فَسَبِّحْ وَأَطْرَافَ النَّهَارِ لَعَلَّكَ تَرْضَى
-(হে নবী!) আর আপনি রাতের মুহূর্তগুলোতেও তাসবীহতে রত থাকুন এবং দিনের প্রান্তসমূহেও, যাতে আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যান (ত্বহা: ১৩০)।
.
অষ্টম ক্ষতি: কিয়ামকারীদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ আছে, সেটা থেকে বঞ্চিত হওয়া।
وتوكل على العزيز الرحيم الَّذِي يَرَاكَ حِينَ تَقُومُ * وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِينَ
-আর ভরসা রাখুন মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু (আল্লাহর)-এর প্রতি, যিনি আপনাকে দেখেন যখন আপনি (ইবাদতের জন্যে দাঁড়ান। এবং দেখেন সিজদাকারীদের মধ্যে আপনার যাতায়াতকেও (শু‘আরা: ২১৭-১৯)।
.
অন্তত দুই রাকাতও কি সম্ভব নয়? ইচ্ছা করলে অবশ্যই সম্ভব।

Comments